সম্প্রীতির ছবি দেখল হাওড়ার পিলখানা, ভালোবাসার শরবত

লাবনী নস্কর : রামনবমীর উৎসবকে ঘিরে বারবার যেখানে হিংসা দেখা গিয়েছিল এবার সেখানেই এমন ছবি ধরা পড়ল। রামনবমীর শোভাযাত্রায় অস্ত্র নিয়ে দাপাদাপি আগে দেখা গিয়েছিল। এবার অস্ত্র দেখা গিয়েছে। তবে তা আগ্নেয়াস্ত্র নয়। শোভাযাত্রাকে লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল পড়েনি। বরং দেখা গেল, রামনবমীর মিছিলের জন্য অপেক্ষা করছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন। শোভাযাত্রা আসতেই উপস্থিত মানুষজনের হাতে দেওয়া হল ‘মহব্বত কা শরবত’। আর এভাবেই সম্প্রীতি–সৌভ্রাতৃত্ব দেখল হাওড়ার পিলখালা, হিংসা, আগ্নেয়াস্ত্রের আস্ফালন বারবার রামনবমীকে সংবাদ শিরোনামে নিয়ে এসেছে। এবার কিন্তু বদলে গেল আবহ। এবারের রামনবমীতে সেই ভুল ভাঙিয়ে দিল পিলখানা। রামনবমীর শোভাযাত্রা নিয়ে অনেক নিয়ম বেঁধে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আর তা মেনেই করা হয়েছে রামনবমী। কোনও গোলমাল আজ, বুধবার দেখা যায়নি। বরং উত্তর হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার অন্তর্গত পিলখানায় সম্প্রীতির ছবি দেখতে পেলেন আপামর বঙ্গবাসী। এই এলাকায় সংখ্যালঘু মানুষজনের বসবাস বেশি। একদা এখানেই জ্বলে উঠেছিল আগুন। তবে এবারের রামনবমীর উৎসব পৃথক আঙ্গিক নিল। আসলে সকালে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তি বজায় রাখতে বার্তা দিয়েছিলেন। হিংসা, আগ্নেয়াস্ত্রের আস্ফালন বারবার রামনবমীকে সংবাদ শিরোনামে নিয়ে এসেছে। সেখানে এবার কিন্তু বদলে গেল আবহ। এবারের রামনবমীতে সেই ভুল ভাঙিয়ে দিল পিলখানা। মুসলিম অধ্যুষিত এই এলাকায় প্রত্যেকবারের মতো এবারও রামনবমীর শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। আর সেখানে দেখা গেল, পিলখানার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন অপেক্ষা করছেন। শরবতের গ্লাস, ঠাণ্ডা জলের বোতল তুলে দিচ্ছেন শোভাযাত্রায় আসা মানুষজনকে। পিলখানা মোড়ে আসতেই একে অপরের গলা জড়িয়ে আলিঙ্গন করলেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন। ঠাণ্ডা পানীয় জল মুখের সামনে ধরলেন। রামভক্তরা এমন আতিথেয়তা পেয়ে আহ্লাদিত। পিলখানার বাসিন্দা আবুল হাসান বলেন, ‘এই প্রচণ্ড গরমে ঠান্ডা পানীয় আসলে ‘মহব্বত কা শরবত’। আমরা চাই সারা দেশে সম্প্রীতি বাতাবরণ তৈরি হোক। হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই, আমাদের মধ্যে কোনও বিভেদ নেই।’ এই সম্প্রীতির বাতাবরণ সারা বছর অটুট থাকুক